ইদানীং ক্লান্তি লাগে। স্ট্যামিনা যেন কমে যাচ্ছে। এনার্জি লেভেল লো। আগে অনেক পরিশ্রম করেও হাঁপিয়ে উঠতেন না। এখন অফিস থেকে ফিরে এত ক্লান্তি লাগে যে বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও আর বেরোতে ইচ্ছা হয় না।
একি বয়স বাড়ার ফল? বুড়িয়ে যাওয়ার উপসর্গ? অনেকে তো অনেক বেশি বয়সেও এত উদ্দীপ্ত থাকেন, যেন চিরতরুণ। তবে আপনার এমন লাগবে কেন?
এক. অনেক সময় কিছু সাধারণ রোগের জন্য শক্তি কমে যেতে থাকে। ক্লান্তি ও অবসাদ লাগে। এর অন্যতম হলো ডায়াবেটিস। এ ছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা, রক্তশূন্যতা বা হৃদ্রোগ আপনার শক্তি ও উদ্দীপনা কমিয়ে দিতে পারে। এমনকি নির্ঘুমতা, স্লিপ এপনিয়া বা বিষণ্নতায় ভুগলে সারা দিন অবসাদগ্রস্ত লাগে। কিছু করতে ইচ্ছা হয় না। জেনে নিন, আপনার এ ধরনের কোনো সমস্যা আছে কি না।
দুই. অনেক ওষুধ আছে যেগুলো সেবন করলে সাময়িকভাবে ক্লান্তি ও অবসাদগ্রস্ত লাগে। যেমন স্নায়ুরোগে ব্যবহৃত কিছু ওষুধ, ডাইউরেটিক, অ্যান্টি-হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ। কোনো ওষুধ শুরু করার পর আপনার খারাপ লাগলে চিকিৎসককে অবহিত করুন।
তিন. খাদ্যাভ্যাসে কোনো সমস্যা আছে কি না, খেয়াল করুন। অনেকেই কিছু না বুঝে উল্টাপাল্টা ডায়েট শুরু করে দিয়ে এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন। ডায়েট করার সময় ক্যালরি মেপে চার্ট করে নিতে হবে যেন ক্যালরি প্রয়োজনের তুলনায় কম না হয়ে যায়। তাহলে আপনার অবসাদ লাগবে। ডায়েট করার অর্থ না খেয়ে থাকা নয়। কোনো খাবার, বিশেষ করে সকালের নাশতা বাদ দেওয়া যাবে না। বিপাক ক্রিয়া বা মেটাবলিজম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এতে। নিয়মিত বিরতিতে খেতে হবে।
চার. এমন হতে পারে যে আসলে আপনার ফিটনেস কমে যাচ্ছে। ফিটনেস বাড়ানোর সবচেয়ে ভালো কৌশল হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা বা হাঁটা। ব্যায়াম আপনার ফুসফুস, হৃদ্যন্ত্র ও পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ায়, জ্বালানি জোগায়। গবেষণায় প্রমাণিত যে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
পাঁচ. কর্মদক্ষতা ও উদ্দীপনা ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত ভালো ঘুম চাই। রাত জেগে কাজ করবেন না। সময়মতো ঘুমাতে যান এবং সময়মতো ঘুম থেকে উঠুন। যাঁরা কাজের জন্য রাতে যথেষ্ট ঘুমাতে পারেন না বা খুব ভোরে ওঠেন, তাঁরা দুপুরে সময় পেলে আধা ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে পারেন। এতে ক্লান্তি দূর হয়।
ছয়. যথেষ্ট পানি পান করুন। গরমে পানিশূন্যতা ও লবণশূন্যতা ক্লান্তি আনে। গরমের দিনে পানির সঙ্গে ফলের রস, ডাবের পানি, লেবু পানি, টক দই ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে স্ট্যামিনা ফিরে পাবেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিন একমুঠো বাদামে ম্যাগনেসিয়াম পাবেন, যা উদ্দীপনা বাড়ায়। আমিষ খাবেন যথেষ্ট। বিশেষ করে মাছ। এ ছাড়া খাবেন দুধ। ভিটামিন ডি আছে সূর্যালোকে, তাই বাইরে গিয়ে হাঁটুন। ভিটামিন ডি-এর অভাব কিন্তু অবসাদ বাড়াতে পারে।
সাত. একঘেয়ে জীবনযাপন অনেক সময় শরীর-মনে ক্লান্তি আনে। তাই মাঝে মাঝে রুটিন বদলানো ভালো। দু-এক দিনের সুযোগ পেলে সপরিবার বা সবান্ধব ঘুরতে চলে যান।
Comments
0 comments
Share on: