সময়ের সাথে সাথে খরচ যে হারে বাড়ছে, সে হারে মানুষের আয় বাড়ছে না। আয় ও ব্যয় এর মধ্যে ভারসাম্য না থাকলে অভাব লেগে থাকবেই। অনেক সময় মাস শেষে ঋণ করে চলতে হয় যা কিনা পরবর্তী মাসের জন্য অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।
একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু আপনি আপনার খরচ কমিয়ে আনতে এবং সেই সাথে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করতে পারেন। খরচ কমানোর দারুণ কিছু টিপস নিয়েই আজকে দেহ‘র এই আলোচনা। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেগুলো কী?
১. খরচ কমাতে কার্ডে পেমেন্ট করবেন না
দিন দিন সবাই কমবেশি কার্ডের উপর নির্ভর হয়ে যাচ্ছি। ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডে বিল পরিশোধ করা সহজ হলেও এতে করে টাকা পয়সার সঠিক হিসেব রাখা হয় না। তাই কেনাকাটার ক্ষেত্রে নগদ টাকা ব্যবহার করুন।
২. প্রতিদিন অল্প হলেও জমানোর চেষ্টা করুন
প্রতিদিন কিছু না কিছু টাকা জমানোর চেষ্টা করুন। হতে পারে সেটা খুবই অল্প। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে সেই টাকায় হাত দেবেন না। বিপদ আপদে সেই টাকা কাজে আসতে পারে।
৩. পুরনো ও অব্যবহৃত জিনিসপত্র বিক্রি করে দিন
পুরনো জিনিসপত্রের প্রতি অনেকরই মায়া ও স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। কিন্তু একেবারে অপ্রয়োজনীয় হলে সেগুলো বিক্রি করে দেওয়াই শ্রেয়। এতে করে বাড়তি কিছু টাকা পাবেন যা নিজের প্রয়োজনে ব্যয় করতে পারবেন।
৪. খরচ কমাতে ডিসকাউন্ট এ কেনাকাটা করুন
নির্দিষ্ট কোনো পন্য কেনার আগে তার উপর কোথাও কোনো ডিসকাউন্ট চলছে কিনা খোঁজ নিন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ডিসকাউন্ট বা ছাড় এ কিনলে ব্যয় অনেকটা কম হবে।
৫. বাইরে খাওয়া কমিয়ে দিন
বন্ধ বান্ধবের সাথে আড্ডার ফাঁকে কিংবা প্রিয়জনের সাথে সময় কাটাতে বাইরে খাওয়া দাওয়া সবারই কম বেশি করা হয়। সপ্তাহে কয়েকদিনের পরিবর্তে মাসে একদিন বাহিরে খান। দেখবেন মাস শেষে অনেকগুলো টাকা বেচে যাবে।
৬. গ্যাস ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করুন
প্রতিমাসে আয়ের একটা অংশ চলে যায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল এর উপর। তাই প্রয়োজন ছাড়া ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র চালু রাখবেন না। গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারলে সংসারের ব্যয় কিছুটা হলেও কমে যাবে।
৭. খরচ কমাতে নির্দিষ্ট বাজেট তৈরি করুন
প্রতিমাসে কত আয় হবে তার উপর ভিত্তি করে, কোন খাতে কত ব্যয় করতে হবে তার জন্য একটা নির্দিষ্ট বাজেট করে ফেলুন। এবং অতিরিক্ত টাকাগুলো সঞ্চয় করুন। এতে করে অতিরিক্ত খরচ করার কোনো সুযোগ থাকবে না।
৮. প্রতিটি খরচের হিসেব রাখুন
কোথায় কত টাকা খরচ হচ্ছে তা লিখে রাখুন। মাস শেষে সেটা নিয়ে বসেন। যেসব খাতে ব্যয় বেশি হচ্ছে একটু চেষ্টা করলেই হয়ত সেখান থেকে খরচ কিছুটা কমিয়ে আনতে পারবেন।
৯. শপিং এ যাবার আগে লিষ্ট করে যান
যা কিছু কিনতে হবে তার একটা তালিকা তৈরি করে নিয়ে যান শপিং এ যাওয়ার সময়। এতে করে একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ভুলবেন না অন্যদিকে অপ্রয়োজনীয় কিছু কেনা হতেও বিরত থাকতে পারবেন।
১০. কোন কিছু কেনার আগে ভাবুন
আমরা মাঝে মধ্যে এমন কিছু জিনিস কিনে ফেলি যার তেমন কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই কোন কিছু কেনার পূর্বে ভালো করে চিন্তা করে দেখবেন। যদি একান্ত প্রয়োজন হয় তবেই কিনবেন। এভাবে অপ্রয়োজনীয় খরচ অনেকটাই এড়িয়ে চলা যায়।
খরচ কমানো খুব কঠিন কিছু নয়। একদিনে কমাতে না পারলে হতাশ হয়ে যাবেন না। ধীরে ধীরে চেষ্টার ফলে অবশ্যই সফল হবেন খরচ কমাতে।
প্রিয় পাঠক আপনি খরচ কমাতে কি পন্থা অনুসরণ করে থাকেন তা আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন কমেন্ট এ। উপরের বিষয়গুলো হতে আপনি যদি খরচ কমানোর নতুন কোনো ধারণা পেয়ে থাকেন তবেই আমাদের স্বার্থকতা। ধন্যবাদ দেহ’র সাথে থাকার জন্য।
প্রবাচ/নাবিয়া/পলাশ
Comments
0 comments
Share on: