চুলের ঠিকঠাক যত্ন নিলে, চুল যথাযথ পুষ্টি পেলে তা ভাঙে ঝরে কম, কাজেই বৃদ্ধিও পায় তাড়াতাড়ি। তাই সবার আগে দরকার চুলের ঠিকমতো যত্নআত্তি করা। কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন, কোন কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে, তারই একাধিক উপায় রইল এখানে।
ঠিকঠাক মেনে চলুন আর দেখুন কীভাবে আপনার একরাশ ঝলমলে উজ্জ্বল চুল কেড়ে নিচ্ছে সবার মুগ্ধ দৃষ্টি! চলুন দেখে নেওয়া যাক কী কী রয়েছে আপনার দীর্ঘ চুলের জন্য-
১. রোদ বাতাস থেকে চুল বাঁচান
চড়া রোদ বা শুকনো বাতাসেও কিন্তু চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সুইমিং পুলের ক্লোরিনযুক্ত পানিও চুলের জন্য খুব খারাপ। অনেকক্ষণ বাইরে থাকতে হলে পাতলা ওড়না বা স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। সাঁতারের সময়ও শাওয়ার ক্যাপ ব্যবহার করতে ভুলবেন না!
২. চুলে শ্যাম্পু করার পদ্ধতি বদলে ফেলুন
যাঁরা প্রতিদিন শ্যাম্পু করেন তাঁদের চুল অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। শুষ্কতার কারণে এ ধরনের চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়, ফলে ফাটে ঝরেও বেশি। কাজেই চুল কখনওই ঘন বা লম্বা হতে পারে না। চুলকে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে সপ্তাহে তিনবারের বেশি শ্যাম্পু করবেন না।
৩. মাসাজে হাল ফিরবে চুলের
মাথায় মাসাজ একদিকে যেমন অত্যন্ত আরামদায়ক, তেমনি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও দারুণ উপকারী। চুলের গোড়ায় আঙুল চালালে মাথায় রক্তসঞ্চালন বাড়বে, চুলের ফলিকলে পুষ্টিও পৌঁছে যাবে সহজেই।
৪. মাসে দু’বার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট
চুলের গোড়ায় গোড়ায় তেলের পুষ্টি পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাসে দু’বার অয়েল মাসাজ করতেই হবে। নারকেল তেল হালকা গরম করে চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। এরপর একটা বড়ো তোয়ালে কুসুমগরম পানিতে ডুবিয়ে ভালো করে নিংড়ে চুলে জড়িয়ে রাখুন, যতক্ষণ না তোয়ালে ঠান্ডা হয়ে যায়। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। চুলের গোড়ায় জমে থাকা তেলময়লা বের করে এনে চুল সুন্দর করে তুলতে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট দারুণ কার্যকরী।
৫. ভেজা চুল মুছতে হবে যত্ন করে
চুল ভেজা অবস্থায় বেশি ঘষে ঘষে মুছবেন না, আঁচড়াবেনও না। ভেজা অবস্থায় চুল দুর্বল থাকে। ফলে দ্রুত মোছা বা আঁচড়ানোর ফলে চুল ভেঙে যেতে পারে। তোয়ালে দিয়ে হালকা হাতে চুল মুছুন, তারপর পাখার হাওয়ায় বা প্রাকৃতিক বাতাসে শুকিয়ে নিন।
৬. কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
শ্যাম্পু চুলের স্বাভাবিক তেলাভাব আর আর্দ্রতা শুষে নেয়। হারানো আর্দ্রতা ফিরিয়ে এনে চুল মসৃণ আর উজ্জ্বল করে তোলে কন্ডিশনার। তাই প্রতিবার শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার লাগাতে কখনওই ভুলবেন না।
৭. ঠান্ডা পানিতে হাল ফিরবে চুলের
গরম পানি চুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। শ্যাম্পু আর কন্ডিশনিং হয়ে যাওয়ার পর বালতি বা গামলায় ঠান্ডা পানি নিয়ে তাতে কিছুক্ষণ চুল ভিজিয়ে রাখুন। এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে, চুলের কিউটিকলও মজবুত হবে। গরম পানি চুলের কাঠামো একদম নষ্ট করে দেয়, তাই চুল ধোওয়ার সময়ও ঠান্ডা পানিই ব্যবহার করুন।
৮. চুল বাড়াতে নিয়ম করে ডগা ছেঁটে দিন
যাঁরা লম্বা চুল পেতে চান, তাঁরা সচরাচর কাঁচির আশেপাশে যান না। কিন্তু সত্যি বলতে, তিন মাস অন্তর চুল ছেঁটে ফেললে চুল বাড়ে ভালো। ডগা ফাটার সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের তো অবশ্যই নিয়মিত চুল ছেঁটে ফেলতে হবে।
৯. কেমিকাল থেকে দূরে থাকুন
অতিরিক্ত স্টাইলিং প্রডাক্টের ব্যবহার চুলের ক্ষতি করে। তাই ঘন ঘন চুলে রং, হেয়ার ল্যাকার বা অন্য কোনও কৃত্রিম রাসায়নিক জিনিস লাগাবেন না। এমনকী, আপনার শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারেও যদি কেমিকালের পরিমাণ বেশি থাকে, চুল খারাপ হয়ে যাবে।
১০. স্টাইলিং চুলের জন্য ক্ষতিকর
ঘন ঘন হেয়ার স্ট্রেটনিং, কার্লিং, পার্মিং করতে গিয়ে চুলে যে পরিমাণ তাপ দিতে হয়, তাতে মারাত্মক ক্ষতি হয়। ঘন ঘন স্টাইলিং করবেন না, করার আগে অবশ্যই হিট প্রোটেকট্যান্ট প্রডাক্ট লাগিয়ে নিন। রোজ রোজ ড্রায়ার ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক হাওয়ায় চুল শুকোন। চুল মজবুত থাকলে বাড়বেও তাড়াতাড়ি।
Comments
0 comments
Share on: