আজকালকার দিনে চোখের চারপাশে কালি বা ডার্ক সার্কেল খুবই কমন সমস্যা মেয়েদের মধ্যে। এটা এমন ত্বকের সমস্যা যা সুন্দরীর সৌন্দর্য নিমিষেই মলিন করে দেয়। মানসিক দুশ্চিন্তা, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অপরিমিত ঘুম আরও বিভিন্ন কারণে অল্প বয়সে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দেহ আজকের আলোচনায় ডার্ক সার্কেল কমাতে ১০টি ঘরোয়া পদ্ধতি ও ব্যক্তিগত অভ্যাস প্রসঙ্গে আলোকপাত করবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেগুলো কী।
১. ডার্ক সার্কেল কমাতে কাঁচা আলু

কাঁচা আলু ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই পেস্ট দাগের মধ্যে দিয়ে ১০—১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুই তিন প্রয়োগ করলে ধীরে ধীরে ডার্ক সার্কেল কমাতে সাহায্য করবে। ব্লেন্ড করতে ঝামেলা মনে হলে আলু স্লাইস করে কেটে চোখের নিচে দিয়ে রাখতে পারেন।
২. শসার ভূমিকা ডার্ক সার্কেল কমাতে

শসা স্লাইস করে কেটে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিন। তারপর চোখ বন্ধ করে ১০ মিনিট শসার স্লাইস দিয়ে রাখুন। নিয়মিত শসার ব্যবহার চোখের চারপাশের কালো ভাব কমাতে সাহায্য করবে।
৩. ঠান্ডা দুধ

ঠান্ডা দুধ কটন বলে ভিজিয়ে চোখের নিচে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চোখের ডার্ক সার্কেল কমাবে।
৪. ডার্ক সার্কেল কমাতে ঠান্ডা চায়ের ব্যাগ

সবুজ বা কালো চায়ের ব্যাগ ফেলে না দিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। চা ব্যাগ দিয়ে চোখের কালি দাগ দূর করা সম্ভব। প্রতিদিন ঠান্ডা চায়ের ব্যাগ চোখের উপর কিছুক্ষণ দিয়ে রাখুন।
৫. টমেটো

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটোর রস নিয়মিত ত্বকে ম্যাসাজ করলে ত্বকের ভিতরে বিশেষ কিছু উপাদানের পরিমাণ বাড়তে থাকে। যার ফলে ডার্ক সার্কেল কমে যাওয়ার পাশাপাশি ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
৬. বাদাম তেল

ভিটামিন ই সমৃদ্ধ এই বাদাম তেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ভিতর থেকে লাবণ্য ফুটিয়ে তোলে। সেই সাথে ত্বক নরম ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত অল্প পরিমাণ বাদাম তেল হাতে নিয়ে চোখের নিচে ম্যাসাজ করতে হবে। সবচাইতে ভালো হয় যদি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
৭. কমলালেবুর রস

কয়েক চামচ কমলালেবুর রসের সঙ্গে অল্প গ্লিসারিন মিশিয়ে চোখের নিচে লাগালে, একদিকে যেমন ডার্ক সার্কেল এর প্রকোপ কমবে অন্যদিকে ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় হয়ে উঠবে। অল্প সময়ের মধ্যে এই সমস্যা কমাতে চাইলে এই পদ্ধতিটি খুবই কার্যকর।
৮. ডার্ক সার্কেল কমাতে পর্যাপ্ত ঘুম

ডার্ক সার্কেলের সাথে ঘুমের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। রাতে না ঘুমানো চোখের নিচে কালি পড়ার অন্যতম কারণ। প্রতিদিন অন্তত ৬—৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। এবং অবশ্যই সারা রাত না জেগে রাতের ঘুমে অভ্যস্ত হতে হবে।
৯. ডার্ক সার্কেল নিয়ন্ত্রণে পানির প্রয়োজনীয়তা

শরীর থেকে বেশি মাত্রায় পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। যার ফলে চোখের নিচে কালি পড়ে। ঘামের মাধ্যমে ও শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
১০. মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন

চোখের নিচে কালি পড়ার অন্যতম একটি কারণ হলো অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা। তাই চেষ্টা করুন দুশ্চিন্তা ও চাপ থেকে দূরে থাকতে তাহলে চোখের নিচের কালিও দূরে থাকবে।
আমাদের চোখ এর নিচে যে ত্বক রয়েছে তা অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং এর নিচে অনেক ছোটো ছোটো রক্তনালি রয়েছে যারা ধীরে ধীরে বড়ো হতে থাকে এবং চোখের নিচের ত্বক কালো হতে থাকে। বয়সের সাথে সাথে প্রাকৃতিক নিয়মে এই সমস্যা বাড়বেই। কিন্তু সঠিক জীবনচারণের মাধ্যমে একে নিয়ন্ত্রণে রাখা অসম্ভব কিছু নয়।
প্রিয় পাঠক আশা করছি চোখের নিচের কালি কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপরিউক্ত বিষয়গুলো আপনাকে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। লেখাটি ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ দেহ’র সাথে থাকার জন্য।
নাবিয়া/পলাশ/প্রবাচ
Comments
0 comments
Share on: